কানাডা ছাত্র ভিসায় আবেদনের জন্য প্রথমে আপনাকে কানাডার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার নিতে হবে। কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সাধারনত DLI(Designated Learning Institute) বলা হয়।
অফার লেটার সংগ্রহের জন্য আপনাকে কোন প্রতিষ্ঠানের যে সাবজেক্টে পড়তে চান সে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে হবে।
ধরে নেই আপনি মাস্টার্স বা ডিপ্লোমা কোর্স করতে কানাডা যেতে চাচ্ছেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে ঐ সাবজেক্টে পড়ার জন্য কোয়ালিফিকেশন থাকতে হবে। যেমন শিক্ষাগত যোগ্যতা, আই এল টি এস ইত্যাদি যা ওই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দেয়া থাকে।
(কিভাবে আপনি সাবজেক্ট পছন্দ করবেন, অফার লেটার পেতে হলে কি কি লাগবে বা অফার লেটারের আগের প্রয়োজনীয় কাজ কি কি ওটা লিখলে উত্তর বিশদ হয়ে যাবে বিধায় লিখলাম না)
যাই হোক ধরে নিলাম আপনি কোন বিশ্ববিদ্যালয় হতে অফার লেটার (Letter of Acceptance) পেয়েছেন। এখন আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে।
অফার লেটার পাবার সাথে সাথেই আপনাকে ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুছিয়ে রেডি করতে হবে।আপনি দুইভাবে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। অনলাইন ও পেপার বেইজড।তবে অনলাইনে আবেদন সহজ ও দ্রুত। কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তা ircc website এ দেয়া আছে।
তবুও সংক্ষেপে বলে দেই ।
*স্টাডি প্ল্যান (আপনি কেন কানাডায় পড়তে যেতে চাচ্ছেন, পড়াশুনা শেষ করে দেশে আবার ফিরে আসবেন কিনা,কেন আপনি আপনার দেশে এই কোর্স করছেন না, দেশে এসে এই শিক্ষা কিভাবে কাজে লাগাবেন,এই সাবজেক্টের ক্যারিয়ার প্রগ্রেসন কি ইত্যাদি খুব সুন্দর ভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে)
*পাসপোর্ট(আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ কোর্স শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকা উচিৎ।কারন পাসপোর্ট মেয়াদ অনুযায়ী আপনাকে ভিসার মেয়াদ দেয়া হবে। তবে না থাকলেও সমস্যা নাই। ওখান থেকেই মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে )
*লেটার অফ এক্সেপ্টেন্স (যেটা আগেই বলেছি)
*ডিজিটল ফটো(কানাডিয়ান ফরম্যট)
*আই এল টি এস স্কোর(বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আই এল টি এস যোগ্যতা বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ভিসার জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রত্যেক মডিউলে ৬.০ থাকতে হবে।নাহলে ভিসা পাওয়া দুস্কর)
*সিভি(যদি আপনার কাজের অভিজ্ঞতা থাকে)
*শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সার্টিফিকেট
*পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
*ফাইনেন্সিয়াল ডকুমেন্টস ( শিক্ষাকালীন সময়ে আপনার প্রয়োজনীয় খরচ চালানোর মত যোগ্যতা আছে কিনা তা দেখাতে হবে। সাধারনত পুরো টিউশন ফিস ও কমপক্ষে এক বছরের লিভিং এক্সপেন্স দেখাতে হবে। এ জন্য আপনার স্পন্সরের ডিক্লারেশন ফরম, ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট(নুন্যতম ৬ মাস), স্পন্সরের আয়ের উৎস, ট্যাক্স এসেসমেন্ট(২ বছর), জমি থাকলে CA Evaluation, সরকারি চাকুরি হলে প্রভিডেন্ট ফান্ড, অবসর ভাতা ইত্যাদি প্রমাণস্বরূপ দিতে হবে।
*LMM form (কিছু ডকুমেন্টস আপনাকে ircc দিয়ে দিবে যা আপনাকে পুরন করে দিতে হবে। যেমন IMM1294, IMM 5257,IMM 5645 ইত্যাদি
*মেডিক্যাল ( কানাডা সরকার কর্তিক কিছু মেডিক্যাল সেন্টার থাকে যাদের কাছ থেকে আপনাকে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে হবে)। অনেকে আগেই করে জমা দেন যাকে বলা হয় আপফ্রন্ট। যাতে করে এপ্লিক্যাশন দ্রুত প্রসেস হয়। মেডিক্যাল আগে করা না থাকলে মেডিক্যাল রিকোয়েস্ট আসলে তারপর মেডিক্যাল করাতে হয়।
এরপর ভিসা ফি জমা দিয়ে আপনাকে পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ক্লাশ শুরু হবার কমপক্ষে ২/৩ মাস আগে ভিসার আবেদন করা উচিৎ।
যদি ভিসা রিফিউজাল আসে ভয় পাবেন না। নির্দিষ্ট কারন জেনে আবার আবেদন করতে পারবেন।তবে কখনোই কোন তথ্য গোপন করবেন না বা ভুল তথ্য দিবেন না। যদি ধরা পরেন তবে আপনাকে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে অর্থাৎ এই ৫ বছরের মধ্যে আপনি আর ভিসার আবেদন করতে পারবেন না।
আরেকটা কথা। ভিসা আবেদনের জন্য এজেন্টের কাছে ধরনা দেবার দরকার নেই। চোখ কান খোলা রাখুন, গুগল করুন সব নিজে নিজেই করতে পারবেন।
আমি চেষ্টা করেছি সংক্ষেপে সব আলোচনা করতে। যদি নির্দিষ্ট বিষয়ে জানতে চান তবে আলাদা করে বললে আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
আপনার জন্য শুভকামনা। ধন্যবাদ।