আমরা বিভিন্ন সময়ে সফর করে থাকি ।কিন্ত সফরের নিয়ম সমূহ জানা থাকালে সফর করা অনেক সহজ হয়ে যায় । সেই কারনে আজ আমরা আপনাদের নিকট হজের সফরের বিষয়ে শরী’আতের বিধি-বিধান কী এবং সফর সংক্রান্ত বিষয়ে শরী’আতের বিধি-বিধান কী এবং আমাদের কি কি করনীয় তাহা তুলে ধরছি ।
যেকোন সফরে বের হওয়ার সময় কুরআন -সুন্নায় বর্নিত নিম্ন বর্নিত আদব গুলো মেনে চলা উচিত :
১- সফরের পূর্বে অভিজ্ঞ লোকদের সাথে পরামর্শ করে এবং দু’রাকা’আদ ইস্তেখারার সালাত আদায় করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত । (বুখারী)
২-অসিয়তনামা লিখে যাবেন ।রিন আছে কিনা তাও লিখে দিয়ে যাবেন ।কারন ,আপনি ফিরে আসতে পারবেন কিনা তাহা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
৩-পরিবারের লোকদের তে তাকওয়া অর্জনের এবং ইসলামী জীবন যাপন করার অসিয়ত করে যাবেন ।
৪-সাখী হিসাকে নেককার লোক বাছাই করে নিবেন । (বুখারী:৫৫৩৪,মুসলিম:২৬২৮)।
৫৫৩৪. আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎসঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর দৃষ্টান্ত হল, কস্তুরীওয়ালা ও কামারের হাপরের ন্যায়। কস্তুরীওয়ালা হয়ত তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার নিকট হতে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার নিকট হতে তুমি সুবাস পাবে। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার নিকট হতে পাবে দুর্গন্ধ। [২১০১; মুসলিম ৪৫/৪৫, হাঃ ২৬২৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫১২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫০২৩)
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسٰى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الْجَلِيسِ الصَّالِحِ وَالسَّوْءِ كَحَامِلِ الْمِسْكِ وَنَافِخِ الْكِيرِ فَحَامِلُ الْمِسْكِ إِمَّا أَنْ يُحْذِيَكَ وَإِمَّا أَنْ تَبْتَاعَ مِنْه“ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ مِنْه“ رِيحًا طَيِّبَةً وَنَافِخُ الْكِيرِ إِمَّا أَنْ يُحْرِقَ ثِيَابَكَ وَإِمَّا أَنْ تَجِدَ رِيحًا خَبِيثَةً.
বুখারী:৫৫৩৪
৫-পরিবার পরিজন ও আত্নীয় স্বজনের থেকে বিদায় নিয়ে যাবেন ।(ইবনে মাজাহ)
৬- বৃহস্পতিবার এবং দিনের শুরুতে সফরে ওয়ানা দেয়া মুস্তাহাব ।(বুখারী:২৯৫০)।
৭-ঘর থেকে বের হওয়ার দুআটি পড়ে রওয়ানা দেবেন ।দুআ’টি নিম্নরুপ
৩৪২৬। আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঘর হতে কেউ বাইরে রাওয়ানা হওয়াকালে যদি বলে, “আল্লাহ তা’আলার নামে, আল্লাহ তা’আলার উপরই আমি নির্ভর করলাম, আল্লাহ তা’আলার সাহায্য ব্যতীত বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই”, তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহ তা’আলাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, (অনিষ্ট হতে) তুমি হিফাযাত অবলম্বন করেছ। আর তার হতে শাইতান দূরে সরে যায়।
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ الأُمَوِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ قَالَ – يَعْنِي إِذَا خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ – بِسْمِ اللَّهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللَّهِ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ . يُقَالُ لَهُ كُفِيتَ وَوُقِيتَ . وَتَنَحَّى عَنْهُ الشَّيْطَانُ ” . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْرِفُهُ إِلاَّ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ .
সহীহঃ মিশকাত তাহকীক সানী (হাঃ ২৪৪৩), তা’লীকুর রাগীব (হাঃ ২/২৬৪), আল-কালিমুত তাইয়্যিব (হাঃ ৫৮/৪৯)। (তিরমিযী:৩৪২৬)
৮- গাড়ী বা বিমানে উঠেই তিনবার ”আল্লাহু আকবার” বলা ।অত:পর সফরের দু’আ পড়া ।দুআ’টি নিম্নরুপ
بسم الله الرحمن الرحيم سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হাজা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনিন ওয়া ইন্না ইলা রব্বিনা লামুনকলিবুন।
৯-একাকী সফরে না যাওয়াই উত্তম । (বুখারী:২৯৯৮)।
২৯৯৮. ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি লোকেরা একা সফরে কী ক্ষতি আছে তা জানত, যা আমি জানি, তবে কোন আরোহী রাতে একাকী সফর করত না। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৭৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৭৮৭)
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ يَعْلَمُ النَّاسُ مَا فِي الْوَحْدَةِ مَا أَعْلَمُ مَا سَارَ رَاكِبٌ بِلَيْلٍ وَحْدَهُ
১০-সফরে তিনজন হলে একজনকে আমীর বানিয়ে নেওয়া (আবু দাউদ:২৬০৮)।
১১-পথেঘাটে উপরে উঠার সময়ে ”আল্লাহু আকবার” এবং নিচে নামার সময়ে “সুবহানল্লাহ” বলেন (বুখারী:২৯৯৩)।
১২-বেশী বেশী দু’আ করা কেননা , মুসাফিরের দু”আ কবুল হয় (তিরমিযী)।
১৩-গোনাহের কাজ থেকে বিরক থাকা। সত কাজের আদেশ এবং অসত কাজের নিষেধ করা । চরিত্র হেফাজত রাখা ।
১৪- সঠিক ভাবে সালাত আদায় করা । তিলাওয়াত,যিকির ও তাসবিহ পাঠ করা ।
১৫-পথের সাথী ও দূর্বল কে সহায়তা করা । পারলে টাকা পয়সা দিয়ে এগিয়ে আসা । (মুসলিম:১৯২৭)
১৬-কাজ শেষে দেরি না করে তাড়াতাড়ি সফর থেকে ফেরত চলে আসা । (বুখারী:১৮০৪,মুসলিম:১৯২৭)।
১৭-রাতের বেলা ঘরে ফেরার চেষ্টা না করা ভালো । (বুখারী:১৮০৪,৫২৪৬)
১৮-সফর শেষে মুস্তাহাব হলো নিজ ঘরে প্রবেশের পূর্বে নিকটতম মসজিদে দু’রাকা’আত নফল সালাত আদায় করা ((বুখারী:৪৪১৮)
১৯-নিজ গ্রামে ও ঘরে প্রবেশের নির্ধারিত দু’আ পড়া (মুসলিম) ।
অনুবাদ: ”আল্লাহর নামে প্রবেশ করলাম,আল্লাহর নামেই বের হলাম ,আর আমাদের রব্ব আল্লাহর উপরে ভরসা করলাম ।”
২০-পরিবারের লোকজনের জন্য হাদিয়া উপঢোকন নিয়ে আসা এবং ঘরে ফিরে তাদের সাথে কোমল ব্যবহার করা ।
২১-সফর থেকে ফিরে এসে এলাকার লোক সাথে মু’আনাকা (কোলাকুলি) ও মুসাফাহ করা ।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর থেকে ফিরে তার সাথীদের জন্য খাবারের ব্যাবস্থা করতেন ।(বুখারী)
২২-হানাফী ফকিহদের মতে,পথের দূরত্ব ৪৮ মাইলের বেশি হলে এটিকে সফর ধরা হয় । সফর অবস্খায় যোহর ,আসর এবং ঈশার৪ রাকা’আত ফরয সালাত গুলো ২ রাকা’আত করে কসর করে পড়তে হবে নামাজ আদায় করা । সুন্নাত নফল পড়া লাগে না ।তবে ততাহিয়্যাতুল মাসজিদ আর তাহিয়্যাতুল ওযূর সালাত পরতে পারেন ।
২৩-সফর অবস্থায় জুমা”আর না পরলে গোনাহ হবে না ।সুযোগ থাকলে জুমআ পরবেন। আর তা না হলে জুমআর সালাতের বদলে যোহর পগে নেবেন ।সফরে সালাতরত অবস্থায় কিবলা ঋ উল্টা পাল্টা হয়ে গেলেও সালাত শুদ্ধ হয়ে যাবে ,(সূরা ২: আল বাকারাহ-১১৫)।তবে কিবলা কোন দিকেএটি একটু চিন্তা ভাবনা করে ঠিক করে নিতে চেষ্টা করা ।
হজের সফরে সবচাইতে বেশী জরুরী হলো আপনার গাইড কে ফলো করা ।কারন ,আপনার গাইড আপনার জন্য যাহা ভালো সেই বিষয়ে আপনাকে সহযোগিতা করবেন ।
আমরা আপনাদের সেবা দেওয়ার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছি।
আলহাম্মদুল্লিলাহ আমরা শতভাগ কথা কাজে মিল রাখতে চেষ্টা করি।
দীর্ঘ ২ যুগ ধরে বিশ্বস্ততার সাথে কাবার মেহমান হজ ও উমরাহ হাজীদের খেদমতে আছি, আমরা জিলহজ্জ গ্রুপ বাংলাদেশ।.
একঝাক তরুন ও উদ্দোমী,আলেম, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন টীমের মাধ্যমে জিলহজ্জ গ্রুপ বাংলাদেশ পরিচালিত হয়।
আমরা বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত বৈধ হজ লাইসেন্স এবং আইটিএ অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান ।
আপনার বিশ্বস্ত ট্রাভেল পার্টনার
যোগাযোগঃ
ইমু ও হোয়াটসএপ
01711165606
01715595991
ঢাকা অফিসঃ ৫১/১ ভিআইপি টাওয়ার,লেভেল -৫,ভিআইপি রোড,নয়াপল্টন ,ঢাকা।
কেরানীগঞ্জ অফিসঃ ২৭১ নং জিলা পরিষদ মার্কেট পূর্ব আগানগর,দক্ষিন কেরানীগঞ্জ,ঢাকা।৷