ক্রোয়েশিয়া ভিসা ফর বাংলাদেশী – ক্রোয়েশিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
ক্রোয়েশিয়া হচ্ছে ইউরোপের উন্নত একটি দেশ। বিশ্বের অনেক দেশ থেকে পড়াশোনা ভ্রমণ ও বিভিন্ন কাজের জন্য অনেকেই ক্রোয়েশিয়াতে এসে থাকেন। ক্রোয়েশিয়া সরকার প্রতিবছর বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে।
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের অনেক দেশের কর্মী ক্রোয়েশিয়া সরকার নিয়ে থাকে।ক্রোশিয়াতে কাজের বেতন অনেক ভালো তাছাড়া অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। অনেকে এই কারণে ক্রোয়েশিয়াতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চাই।
আজকের পোস্টে ক্রোয়েশিয়া ভিসা পাওয়ার উপায়, ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে, ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন কত ও ক্রোয়েশিয়া থাকার সুযোগ সুবিধা কেমন হতে পারে তাই নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেরি না করে যেন দেওয়া যাকঃ
ক্রোয়োশিয়া যাওয়ার উপায়?
বাংলাদেশ থেকে কয়েকটি ক্যাটাগরির ভিসার মাধ্যমে ক্রোয়োশিয়া যাওয়া সম্ভব। ভ্রমণ ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা,স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে কেউ চাইলে ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ও টুরিস্ট ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। তবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে শুধুমাত্র তখনই যেতে পারবেন যখন ক্রোয়েশিয়া সরকার নতুন করে লোক নিয়োগ দিবে।
আর যদি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যেতে চান তাহলে ক্রোয়েশিয়া ভিজিট ভিসা নিয়ে যেতে হবে। ক্রোয়েশিয়া যেতে হলে সরাসরি ভারতের এম্বাসি থেকে ক্রোয়েশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে অথবা অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
কেননা বাংলাদেশে ক্রোয়েশিয়ার কোন embassy নেই যার কারণে সরাসরি ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করতে হবে। তারা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে ভিসা প্রদান করলে সশরীরে গিয়ে ভিসাটি নিয়ে আসতে হবে তারপর ক্রোয়েশিয়া যেতে পারবেন।
ক্রোয়েশিয়া কাজের ভিসা?
ক্রোশিয়াতে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণে অনেক দেশ থেকে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিকরা চাইলে ক্রোসিয়াতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
croatia,ক্রোয়েশিয়া,ভিসা
ক্রোশিয়াতে কখনোই কাজের দক্ষতা না থাকলে ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন না।
অর্থাৎ আপনি যদি অভিজ্ঞ একজন শ্রমিক হন তাহলে কাজের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে। কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের কিছু শর্তাদি রয়েছে সেগুলো পূরণ করে তারপর ক্রোয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিতে হবে।
তারপরে আপনাকে ক্রোয়েশিয়ার ভাষায় দক্ষ হয়ে উঠতে হবে অথবা ইংরেজি ভাষাটি শিখতে হবে। আর আপনি যেই কাজের জন্য ভিসা নিতে চান সেই কাজের উপরে অবশ্যই আপনার দক্ষতা সার্টিফিকেট থাকতে হবে তাহলে খুব সহজেই ক্রোয়েশিয়া ভিসা পেয়ে যাবেন।
ক্রোয়েশিয়া ভিজিট ভিসা?
ক্রোয়েশিয়া ভিজিট ভিসার মাধ্যমে ভ্রমণ করা যাবে। কিছু শর্তাদি পালন করার মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তি চাইলে ক্রোয়েশিয়া ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। ক্রোয়েশিয়া ভিজিট ভিসাতে সর্বনিম্ন ৩০ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন।
ক্রোয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে?
ক্রোয়োশিয়া ভিসার দাম কত এই নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে।ক্রোয়োশিয়া যাওয়ার জন্য যেহেতু অনেক ধরনের ভিসা দেওয়া হয়ে থাকে তাই ভিসার ধরন অনুযায়ী খরচের পরিমাণ কম বেশি হয়ে থাকে। ক্রোশিয়াতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে হলে সাত থেকে আট লক্ষ টাকার মতো খরচ হতে পারে।
যদি কেউ ক্রোশিয়াতে স্টুডেন্ট ভিসার মাধ্যমে চাই তাহলে তার খরচ হবে চার লক্ষ টাকার মতো আর কেউ যদি টুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে যায় তাহলে তার খরচ হবে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বেশি।তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে অনেকে ক্রোয়েশিয়া তে চিকিৎসার জন্য যাই তাদের খরচ তুলনামূলকভাবে চিকিৎসা খরচ বাদেই দুই লক্ষ টাকার বেশি হয়ে থাকে।
ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন?
ক্রোয়েশিয়াতে শ্রমিক ভিসায় যারা কাজ করে থাকেন তাদের সর্বনিম্ন বেতন মাসে ৫০০০০ টাকা।তাছাড়া যারা ক্রশিয়াতে ফুল টাইম কাজ করে থাকেন অর্থাৎ ওভারটাইমসহ তাদের মাসে বেতন আসতে পারে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার কাছাকাছি।
অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় ক্রোয়েশিয়াতে যাতায়াত খরচ সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ সবকিছুই কোম্পানী বহন করে থাকে। তাছাড়া ক্রোয়েশিয়াতে মাস শেষে নির্দিষ্ট কিছু বোনাস সুবিধা চালু রয়েছে।অর্থাৎ ক্রোয়েশিয়াতে যদি কোন অভিজ্ঞ শ্রমিক কাজ করে থাকেন তাহলে সে প্রতি মাসে অনায়াসে ১ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন।
ক্রোশিয়াতে কোন কাজের চাহিদা বেশি?
ক্রোশিয়াতে কনস্ট্রাকশন কাজের অনেক বেশি চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া নিচে ক্রোশিয়াতে চাহিদা সম্পন্ন কিছু কাজের তালিকা দেওয়া হলোঃ
- ডেলিভারি বয়
- ফুড প্যাকেজিং
- রোড কার ফিটিং
- টাইলস মিস্ত্রি
- গবাদি পশু পালন
- রেস্টুরেন্ট
- মার্কেটিং
- মেকানিক্যাল
- ক্লিনিং
- ইলেকট্রিক্যাল
আপনারা যদি এই সকল কাজগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি কাজে অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তাহলে ক্রোয়েশিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।কেননা এই কাজগুলোর জন্য ক্রোয়েশিয়াতে অসংখ্য লোকের দরকার হয়ে থাকে।
ক্রোয়েশিয়া কাজের ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?
ক্রোশিয়াতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে হলে কিছু ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। অর্থাৎ ক্রোশিয়াতে যখন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাবেন তখন কিছু শর্তাদি পালন করে তারপরে ভিসা নিতে হবে। যেমনঃ
- ৬ মাস মেয়াদের একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট প্রয়োজন হবে
- আবেদন কারী ব্যক্তির এনআইডি কার্ডের ফটোকপি সহ তার বাবা-মার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি লাগবে।
- জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি লাগবে
- দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে
- আপনি কোন কাজে অভিজ্ঞতার সনদপত্র বা দক্ষতার সার্টিফিকেট লাগবে।
- ক্রোশিয়াতে এর আগে কখনো গিয়েছেন কিনা তার প্রমাণ পত্র দেখাতে হবে।
- চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিক সনদ প্রয়োজন হবে।
এই ডকুমেন্টগুলো থাকলেই ক্রোয়োশিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে তারা সকল কিছু যাচাই-বাছাই করে আপনাকে ক্রোয়েশিয়া ভিসাটি প্রদান করবে।
ক্রোয়োশিয়া যেতে কত বয়স লাগে?
ক্রোয়েশিয়াতে কাজের ভিসায় যেতে হলে বয়স অবশ্যই সর্বনিম্ন ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর পর্যন্ত হতে হবে।টুরিস্ট ভিসায় বয়সের ক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা না থাকলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময় বয়সের শর্তাদি পূরণ করতে হয়।
শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে ক্রোয়েশিয়া যাওয়ার উপায়, ক্রোয়োশিয়া ভিসা দাম কত ও ক্রোয়েশিয়া কাজের বেতন কত এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।
তারপরেও যদি এই নিয়ে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আপনার মূল্যবান প্রশ্নটির খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর প্রদান করার চেষ্টা করা হবে। ধন্যবাদ।